এক বছর আগে পর্যন্ত জাতীয় দলের পরিকল্পনায় তাঁর নামও ছিল না। ভাগ্যের চাকা ঘুরল এক অপ্রত্যাশিত সময়ে প্রতীকা রাওয়াল চোট পেয়ে ছিটকে যেতেই সুযোগ এল শেফালি বর্মার সামনে।
আর সেই সুযোগকেই জীবনের সেরা মুহূর্তে পরিণত করলেন রোহতকের এই তরুণী। রবিবারের বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতীয় দলের হয়ে প্রধান ভূমিকায় দেখা গেল তাঁকেই।
ফাইনালের নায়িকা শেফালি
শেফালির ব্যাটে এল আগুন ঝরা ৮৭ রানের দুরন্ত ইনিংস। শুধু তাই নয়, বল হাতেও তুলে নিলেন দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সুবাদেই তিনি হয়ে গেলেন ম্যাচের সেরা। অথচ কিছুদিন আগেও তিনি ছিলেন জাতীয় দলের বাইরে ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণে জায়গা হারিয়েছিলেন প্রতীকার কাছে।
বিশ্বকাপের রিজার্ভ দলেও ছিলেন না। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল প্রতীকার চোট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। সুরাটে বোর্ডের এক টুর্নামেন্ট খেলছিলেন শেফালি। সেখান থেকে সরাসরি বিশ্বকাপের দলে ডেকে নেওয়া হয় তাঁকে। আর ফাইনালের সেরা পারফরমার হয়ে যেন লিখে ফেললেন নিজের রূপকথা।
আবেগঘন শেফালি, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ
জয়ের পর শেফালি বলেন, “আগেও বলেছি, ঈশ্বর আমাকে এখানে ভালো কিছু করার জন্যই পাঠিয়েছেন। এই জয়ের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।” নিজের ইনিংস নিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, “কাজটা সহজ ছিল না। তবে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। জানতাম শান্ত থাকতে পারলে সাফল্য আসবেই। দলের জন্য এই জয়টা খুব প্রয়োজন ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছি, সিনিয়ররা পাশে ছিল স্মৃতি দিদি, হরমন দিদি ভরসা দিয়েছে। তাই খেলাটা সহজ হয়ে গিয়েছিল।”
আরো পড়ুন: ২ নভেম্বর: হরমনপ্রীতের হাতে ইতিহাস, অমনজ্যোতের ক্যাচে কি শুরু হল ভারতীয় ক্রিকেটের নারীযুগ?
শচীন-ভক্ত শেফালি পেলেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ
শেফালি বরাবরই শচীন তেন্ডুলকরের অনুরাগী। আর এদিন নবি মুম্বইয়ের গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং ক্রিকেট ঈশ্বর। সেটাই যেন আরও অনুপ্রেরণা দেয় তাঁকে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে শেফালি বলেন, “শচীন স্যর গ্যালারিতে ছিলেন, তাই মনোবল আরও বেড়ে গিয়েছিল। উনি সবসময় উৎসাহ দেন, ওঁর কথা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো।”
তথ্য বলছে, এদেশের ইতিহাসে কোনও পুরুষ ওপেনারও এখনও পর্যন্ত কোনও আইসিসি ট্রফির ফাইনালে শেফালির ৮৭ রানের চেয়ে বেশি করতে পারেননি। অর্থাৎ গাভাসকর, শচীন, রোহিত সবাইকে টপকে গেলেন ভারতের এই তরুণী ক্রিকেটার। রূপকথার মতোই শেফালির প্রত্যাবর্তন আজ গোটা দেশকে গর্বিত করেছে।



