এসআইআর (SIR) ইস্যু নিয়ে গোটা দেশজুড়ে এখন তীব্র আলোচনা। এই গরম পরিস্থিতিতেই গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে এক মানবিক বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি সরাসরি SIR নিয়ে কিছু না বললেও তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার আহ্বান।
এদিন পোস্তা বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ভারচুয়ালি চন্দননগরের একাধিক পুজোরও উদ্বোধন করেন তিনি। মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “আমরা সব উৎসবই পালন করি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমি কিছু চাই না, শুধু চাই আমাদের দেশ ভালো থাকুক, বাংলা ভালো থাকুক, মানুষ ভালো থাকুক। আমি ডিভাইড অ্যান্ড রুল চাই না। সব প্রকৃত ভোটার ভালো থাকুন। গণতন্ত্রের স্তম্ভকে মজবুত রাখতে হবে। প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে।”
‘মানবিকতাই সবচেয়ে বড় ধর্ম’ ঐক্যের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “মানবিকতা আর মনুষ্যত্বই সবচেয়ে বড় ধর্ম। পাঁচটা আঙুল একসঙ্গে আছে বলেই আমাদের মুঠি শক্ত হয়। সাদা-কালো, ভালো-খারাপ তো সর্বত্রই থাকে। কিন্তু বজ্রমুষ্ঠি আলাদা করা চলবে না। রামকৃষ্ণদেব, স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রীকৃষ্ণ সকলেই মানবিকতার কথাই বলেছেন।”
আরো পড়ুন: আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়
SIR ইস্যুতে উদ্বেগ ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় দফায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে SIR প্রক্রিয়া বাংলা, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, কেরল, লাক্ষাদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। কমিশনের দাবি, এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো নাম বাদ দেওয়া। তবে তৃণমূল আশঙ্কা করছে, বাংলায় এর ফলে যদি কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যায়, তাহলে তারা আন্দোলনে নামবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসআইআরের কারণে রাজবংশী ও মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বিজেপি শিবিরে বাড়ছে অস্বস্তি। তাই রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম একদিকে প্রশাসনিক উদ্যোগ, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া, আর মাঝখানে মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক আবেদন “গণতন্ত্রের পিলার যেন অটুট থাকে।”



