সময় সত্যিই অদ্ভুত এক জিনিস। মাঝে মাঝে সে পুরনো দিনগুলোকে আবারও ফিরিয়ে আনে। বৃহস্পতিবার তাই যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল। অজিদের বিপক্ষে ভারতের মেয়েরা যেভাবে বিশাল রান তাড়া করে জিতল, তাতে ক্রিকেটপ্রেমীরা যেন ফিরে গেলেন ২০১১ সালের সেই বিশ্বকাপ ফাইনালের রাতে। আর সেই মহাকাব্যিক জয়ের নায়িকা নিঃসন্দেহে জেমাইমা রদ্রিগেজ।
যেমন একসময় কাদামাখা জার্সি পরে গৌতম গম্ভীর দেশকে গর্বিত করেছিলেন, ঠিক তেমনই জেমাইমাও বৃহস্পতিবার লড়াকু ইনিংস খেলে তুললেন এক অনন্য নজির। গম্ভীরের মতোই তিনিও দলকে টেনে তুললেন, পার্থক্য শুধু এতটাই তিনি শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকে থেকে জয়টা নিশ্চিত করে এলেন। বলা যায়, ২০১১ আর ২০২৫ যেন আজ এক সরলরেখায় দাঁড়িয়ে গেছে!
চোখের জলে ভেজা আনন্দ, কথায় ফুটল কৃতজ্ঞতা
দলকে ফাইনালে তুলেই চোখের জল আটকাতে পারেননি জেমাইমা। আবেগভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। আমি একা কিছুই করিনি। মা-বাবা, কোচ, আর যারা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন, তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।” এই প্রতিযোগিতা তাঁর কাছে এক রোলার কোস্টার যাত্রার মতো দল থেকে বাদ পড়া, ট্রোলড হওয়া, আবার ফিরে এসে এমন ইনিংস!
সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন জেমাইমা
কয়েকদিন আগেই মুম্বইয়ের খার জিমখানা থেকে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয় ধর্মীয় বিতর্কে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে কটাক্ষের শিকার হতে হয়। অনেকেই তাঁকে তুলনা করেন পাকিস্তানের রিজওয়ানের সঙ্গে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ব্যাট হাতে তিনি সেই সব সমালোচকদের নীরব করে দিলেন। দেখিয়ে দিলেন, লড়াই জানলে প্রতিকূলতাও জয় করা যায়।
আরো পড়ুন: ভারতের ঐতিহাসিক জয়!
সূর্যের প্রশংসা, আলো ছড়াল ‘ছোটা প্যাকেট বড়া ধামাকা’
ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব আগেই বলেছিলেন, “জেমাইমা হলো ছোটা প্যাকেট, বড়া ধামাকা।” সেই কথার সত্যতা প্রমাণ করলেন জেমাইমা নিজের ব্যাটে। হরমনপ্রীতের সঙ্গে গড়া পার্টনারশিপ, শতরান, আর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে ফাইনালে তোলা সব মিলিয়ে তিনিই আজকের দিনের নায়িকা।
শেষমেশ, পুরস্কার তো তাঁরই প্রাপ্য ছিল। কিন্তু পুরস্কার নেওয়ার পরও তিনি বললেন, “আজকের দিনটা আমার না, ভারতের জয়ের গল্প।” কথাটা সত্যি। তবে এই জয়ের আলো যে আজ জেমাইমার কপালেই সবচেয়ে উজ্জ্বল, তা অস্বীকার করার উপায় নেই!



