সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে একেবারেই প্রত্যাশা মতো ফল করতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা।
কিন্তু নির্বাচনী ফলাফলে স্পষ্ট, ৩৫ তো দূরের কথা, গত লোকসভা নির্বাচনের ১৮টি আসনই তা্রা ধরে রাখতে পারেনি। এরকম অবস্থায় আগামী দিনে এই রাজ্যে বিজেপির ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
লোকসভা নির্বাচনে হারের পর বঙ্গ বিজেপিতে ছড়িয়েছে অসন্তোষের আগুন। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ইস্যুতে রাজ্য নেতৃত্বকে তুলোধোনা করে চলেছেন। গত নির্বাচনে দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুর লোকসভা থেকে জিতেছিলেন। এবার রহস্যজনক ভাবে তাঁর কেন্দ্র বদল করা হয়।
মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে তাঁকে দেওয়া হয় নতুন আসন বর্ধমান-দুর্গাপুর, এই আসনে তিনি লড়াই করলেও প্রায় দেড় লক্ষাধিক ভোটে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে পরাজিত হন। এন্যদিকে মেদিনীপুর আসনে প্রার্থী করা হয় বর্ধমানের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলকে। তিনিও তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার কাছে প্রায় ৬০ হাজার ভোটে পরাজিত হন।
এরপরই মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি পরিষ্কার বলেন বর্তমান নেতৃত্ব ২০২১ সালের পর দলীয় সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন। এন্যদিকে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সরাসরি অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি মাত্র ৫ হাজার ভোটে জয়ী হয়ে কোনোরকমে তাঁর গড় রক্ষা করেছেন।
তাঁর মতে RSS সাহায্য না করলে হয়তো এবার বঙ্গ বিজেপি একটিও আসন জিততে পারতো না। একইসঙ্গে দলবদলের সুর তাঁর গলাতেও। যে দলে কাজ করার সুযোগ পাবেন, সেখানেও ভবিষ্যতে যাওয়ার রাস্তা খুলে রাখছেন তিনি।
ইতিমধ্যে ৭ জুন বিজেপির সমস্ত বিজয়ী সাংসদকে দিল্লীতে ডেকে পাঠিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মূলত তাঁর ওপরেই ভরসা রেখেছিল দিল্লীর নেতারা।
কিন্তু শুভেন্দু সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী দিনে এ রাজ্যের সংগঠনে কোন রদবদল হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।