২ নভেম্বর: হরমনপ্রীতের হাতে ইতিহাস, অমনজ্যোতের ক্যাচে কি শুরু হল ভারতীয় ক্রিকেটের নারীযুগ?

amanjyot kaur

amanjyot kaur

২ নভেম্বর এদিনটাকে কি তবে ভারতীয় ক্রিকেটের নারীদিবস বলা যায়? নাদিন ডি ক্লার্কের ক্যাচটা হরমনপ্রীতের হাতে নিখুঁতভাবে জমা পড়তেই মুহূর্তের মধ্যে উত্তেজনায় ফেটে পড়ল গোটা দেশ। ঠিক যেমন ২০২৪ সালে সূর্যকুমার যাদবের সেই রোমাঞ্চকর ক্যাচ ভারতকে এনে দিয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তেমনই ২০২৫ সালের অমনজ্যোত কৌরের হাতে ধরা সেই বলটা যেন আবারও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখে দিল ভারতীয় ক্রিকেটের গর্ব ও গৌরবের নতুন অধ্যায়।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। লর্ডসে কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারত জেতে প্রথম বিশ্বকাপ। ভিভ রিচার্ডসের আকাশচুম্বী শট ধরে কপিল ইতিহাস গড়েছিলেন। প্রায় ৩০ গজ দৌড়ে সেই ক্যাচটা আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে অমলিন। ভিভ আউট হতেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সেই ক্যাচই যেন ভারতীয় ক্রিকেটের আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে।

সূর্যকুমার থেকে অমনজ্যোত ক্যাচের কাহিনি

২০২৪ সালের ২৯ জুন। আরেক বিশ্বকাপ ফাইনাল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচ জয়ের শেষ আশা তখন ডেভিড মিলার। হার্দিক পাণ্ডিয়ার ওভারের প্রথম বলেই মিলারের শট ছুটল বাউন্ডারির দিকে। সূর্যকুমার যাদব দৌড়ালেন, বল লুফে নিলেন, কিন্তু ভারসাম্য হারাতে বসেছিলেন বাউন্ডারির ঠিক ধারে। তবু অবিশ্বাস্যভাবে নিজেকে সামলে বল ছুড়ে আবারও ধরে ফেললেন মাঠের ভেতরে। সেই মুহূর্তেই যেন লেখা হল “ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!”

আরো পড়ুন: ঘরের মাঠে ইতিহাস! শেফালি–দীপ্তির দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত

নারী ক্রিকেটে নতুন সূর্যোদয়

এবার ২০২৫ সালের ২ নভেম্বর। চরিত্রের নাম অমনজ্যোত কৌর। দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট তখন শতরান পার করে ফেলেছেন, ম্যাচ ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছিল। দীপ্তি শর্মার বলে উলভার্টের শট আকাশে উঠে যায়। তিনবার চেষ্টা করে অবশেষে এক হাতে বলটি তালুবন্দি করলেন অমনজ্যোত। সেই এক মুহূর্তে থেমে গেল সময়, বদলে গেল ইতিহাস।

ক্রিকেটের নারীযুগের সূচনা

হরমনপ্রীতের নেতৃত্বে ভারতীয় নারী দল তুলে নিল বিশ্বকাপ। অমনজ্যোতের ক্যাচ শুধু ম্যাচই বদলাল না, বদলে দিল দেশের ক্রিকেট ইতিহাসও। ১৯৮৩-র কপিল, ২০২৪-এর সূর্য, আর ২০২৫-এর অমনজ্যোত তিন প্রজন্মের এই কাহিনি যেন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন সংজ্ঞা লিখে দিল।

২ নভেম্বর, ২০২৫ এই দিনটা হয়তো শুধু একটি ম্যাচের জয় নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের নারীদের আত্মবিশ্বাসের উৎসব হিসেবেই ইতিহাসে থেকে যাবে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *