যতক্ষণ লরা উলভার্ট ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণই টেনশনে ছিলেন হরমনপ্রীত কৌর। সেমিফাইনালের পর ফাইনালেও শতরান করলেন উলভার্ট, কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। অবশেষে তৃতীয় বারের চেষ্টায় শাপমুক্তি ভারতের। ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো হরমনপ্রীতের দল। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে ট্রফি নিজেদের করে নিল ভারত।
রবিবারের ফাইনালের আগে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হওয়ায় খেলা শুরু হতে দেরি হয় প্রায় দু’ঘণ্টা। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক উলভার্ট। তবে সেই সিদ্ধান্ত ভারতের ভাগ্য বদলাতে পারেনি। ব্যাট হাতে দুরন্ত শুরু করেন দুই ওপেনার শেফালি বর্মা ও স্মৃতি মন্ধানা। আক্রমণাত্মক শেফালির ব্যাটে আসে চার-ছক্কার ঝড়। ৪৯ বলে অর্ধশতরান করে ইতিহাস গড়েন তিনি। মাত্র ২১ বছর বয়সে বিশ্বকাপ ফাইনালে অর্ধশতরান করা সর্বকনিষ্ঠ ওপেনার হয়ে যান শেফালি। পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে এই রেকর্ড ভাঙলেন বীরেন্দ্র সহবাগের।
মন্ধানা ৪৫ রানে আউট হলেও শেফালির ব্যাটে রানের ধারা অব্যাহত থাকে। যদিও পরে ক্র্যাম্পে ভুগে তিনি ৭৮ বলে ৮৭ রানে থামেন। অধিনায়ক হরমনপ্রীত ও জেমাইমা রদ্রিগেজ রান পাননি, কিন্তু দীপ্তি শর্মা ও রিচা ঘোষ শেষদিকে দলের ইনিংস সামলে নেন। দীপ্তি ৫৮ ও রিচা ২৪ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ভারতের স্কোর নিয়ে যান ২৯৮-এ।
আরো পড়ুন: বিদায় জানিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু করলেন কেন উইলিয়ামসন
দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়া শুরুটা ছিল দুরন্ত। উলভার্ট ও তাজমিন ব্রিটস মিলে রান তুলছিলেন সহজেই। কিন্তু ভারতের দুর্দান্ত ফিল্ডিং ফেরায় তাদের খেলায়। আমনজ্যোৎ কৌরের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন ব্রিটস, আর তারপর থেকেই ম্যাচ ঘুরতে থাকে ভারতের দিকে।
বল হাতে জাদু দেখান শেফালি ও দীপ্তি। শেফালি নিজের প্রথম ওভারেই ফেরান সুনে লুসকে। পরের ওভারেই আউট করেন মারিজান কাপকে। এরপর দীপ্তির স্পিনে দিশেহারা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা একে একে ফিরতে থাকেন। দীপ্তির নিয়ন্ত্রিত বলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে ৫ উইকেট ঝুলিতে তোলেন তিনি।
অবশেষে ১০১ রানে উলভার্ট আউট হতেই দক্ষিণ আফ্রিকার আশা শেষ। ২৪৬ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়া ইনিংস। শেষ ক্যাচটি ধরেন হরমনপ্রীত কৌর, আর সেই সঙ্গেই শুরু হয় ভারতের জয়োৎসব।
এই জয়ে শেফালি ও দীপ্তির নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে একজন ব্যাট হাতে, অন্যজন বল হাতে এনে দিলেন ভারতের ঘরের মাঠে প্রথম মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়।



