সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানো সবসময় সম্ভব নয় স্পষ্ট ভাষায় মেনে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহ বলেন, “সীমান্ত এলাকা খুব সহজ জায়গা নয়। সেখানে নদীনালা, বনজঙ্গল, পাহাড় সবই আছে। অনেক সময় চেকপোস্ট বানালেও সেটা ভেসে যায়, আর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানোও সম্ভব হয় না।” তাঁর এই বক্তব্যে কার্যত নিজের মন্ত্রক ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সীমাবদ্ধতা স্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বাংলার সরকারের দিকে আঙুল তুললেন শাহ
তবে অনুপ্রবেশের দায় নিজের দফতরের ঘাড়ে নিতে নারাজ শাহ। উলটে তিনি অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, “রাজস্থান, গুজরাট বা অসমে আমাদের সরকার আছে, সেখানে অনুপ্রবেশ হয় না। কিন্তু বাংলা ও ঝাড়খণ্ডে হয়। কারণ তৃণমূলের মতো দল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়, এমনকি রেড কার্পেট বিছিয়ে স্বাগত জানায়।”
কেন্দ্র বনাম রাজ্য, দায় কার?
বিগত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ এবং জনবিন্যাস বদলের ইস্যুতে বিজেপি বারবার সরব হয়েছে। কিন্তু পালটা প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব তো বিএসএফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের, তাহলে দায় রাজ্যের উপর চাপানো হচ্ছে কেন? সমালোচকদের মতে, শাহের সাম্প্রতিক মন্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চেয়েছে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলে।
আরো পড়ুন: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতলেই টিকে থাকবে আশা, চাপে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল
রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট
সাক্ষাৎকারে শাহ আরও বলেন, “অনুপ্রবেশকারীরা যেখানে গিয়ে বসবাস করছে, সেখানে স্থানীয় প্রশাসন কেন নজর রাখছে না?” পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন “২০২৬-এ বাংলায় মমতার সরকার উৎখাত করতে পারলে অনুপ্রবেশও বন্ধ হবে।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে ফের রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, অনুপ্রবেশ নিয়ে দায় এড়াতে গিয়ে কি নিজের মন্ত্রকের ব্যর্থতাই পরোক্ষে মেনে নিলেন অমিত শাহ?
বাংলার রাজনীতিতে অনুপ্রবেশের ইস্যু নতুন নয়, তবে শাহের এই মন্তব্যে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের আগুন আরও প্রজ্বলিত হলো বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।