২০২৩-২৪ অর্থবছরে পশ্চিমবঙ্গে ডিম উৎপাদনের পরিমাণ পৌঁছেছে ১,৬২৩.৯ কোটি ইউনিটে, যা ভারতের জাতীয় গড় উৎপাদনকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই অর্জন শুধু সংখ্যার দিক থেকে নয়, এটা বাংলার কৃষি উন্নয়ন ও প্রযুক্তিনির্ভর চাষের এক বড় প্রমাণ।
রাজ্যের ডিম উৎপাদনের এই বৃদ্ধি গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ এনেছে। হাজার হাজার পরিবার এখন পোল্ট্রি চাষকে জীবিকার মূল ভিত্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে কর্মসংস্থান বেড়েছে, আয় বেড়েছে, আর বাংলার গ্রামগুলো হয়ে উঠছে আরও আত্মনির্ভর। ডিম এখন শুধু পুষ্টিকর খাদ্য নয় এটা বাংলার পরিশ্রম, প্রগতি আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।
বাংলার সাফল্যের গল্প: মাটি থেকে সোনার ফসল
এখন রাজ্যের বহু গ্রামীণ পরিবার পোল্ট্রি চাষকে জীবিকার মূল ভিত্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে।
ডিম উৎপাদন বাড়ার পেছনে রয়েছে সরকারের প্রশিক্ষণমূলক প্রকল্প, উন্নতমানের খাদ্য ও টিকার ব্যবহার,
আর সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন গ্রামীণ নারীরা যাঁরা এখন পোল্ট্রি শিল্পের আসল চালিকাশক্তি।
নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান আর উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কৃষকরা এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। গ্রামের ছোট-বড় পোল্ট্রি ফার্মগুলো এখন শুধু আয়ের উৎস নয়, আত্মনির্ভরতারও প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ডিমে পুষ্টি, ডিমে কর্মসংস্থান
এই বিপুল উৎপাদনের ফলে বাংলার স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি, অন্যান্য রাজ্যেও বিপুল পরিমাণে ডিম পাঠানো হচ্ছে। ফলে রাজ্যের কৃষি খাতে আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানওতৈরি হয়েছে। আজ ডিম শুধু খাদ্য নয় এটা পুষ্টির পাশাপাশি উন্নতিরও প্রতীক। সরকারও স্কুলের মধ্যাহ্নভোজ প্রকল্পে ডিম অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের পুষ্টির মান বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে।
আরো পড়ুন: ফিলিপাইনের লেইটে কেঁপে উঠল ভূমি! রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে আতঙ্কিত মানুষ
আধুনিক কৃষির পথে বাংলা
কৃষি ও পোল্ট্রি খাতে এখন দ্রুত বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। নতুন প্রজন্মের কৃষকরা স্মার্ট ফার্মিং, অটোমেটেড ফিডিং সিস্টেম আর সোলার হ্যাচারি প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। ফলে উৎপাদন বেড়েছে, খরচ কমেছে, আর মুনাফা বেড়েছে বহুগুণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ পোল্ট্রি উৎপাদনে ভারতের প্রথম তিন রাজ্যের মধ্যে জায়গা করে নেবে। এই অর্জন শুধু পরিসংখ্যান নয় এটা বাংলার গ্রামীণ জীবনের আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমের প্রতীক।
বাংলার ডিম আজ শুধু প্রাতরাশ নয়, প্রগতির প্রতীক
আজ বাংলার ডিম মানে পুষ্টি, কর্মসংস্থান আর উন্নতির এক উজ্জ্বল গল্প।
মাটি থেকে উঠে আসা সেই গল্পটাই বলছে “বাংলা পারে!”